বাবু কাকু-শুভ জিত দত্ত
প্রতিদিনের এক চিরন্তন অভ্যাস ছিল
কলেজটার ঠিক বাম পাশে একটা ছোট্ট দোকান
বাবু কাকু নামেও তার বেশ সুনাম।
তার দোকানের লুচিপুড়ি তো সেই নাম করা।
একটু পেটে না পড়লে ঠিক আড্ডাটা জমে না।
কত মানুষের পদধুলি পড়ত তার কি ঠিক আছে
সেই তো সেদিন কার ঘটনা বাবু কাকুর দোকানে
দেখলাম বিখ্যাত রাজনীতিবিদ সঙ্গে ডাক্তার
তারাও সুযোগ পেলে ছুটে আসে লোভ সামলাতে
পারে না ।আর আড্ডা তো আছেই বেশ জমপেশ
কাকুর দোকানে না গেলে দিনটাই মাটি
কেমন যেন নিরামিষি হয়ে যায় পুরো দিনটা।
কত মসলা আর সবজি সঙ্গে তার হাতের জাদু
দেখতে দেখতে কয়েকটা বছর জড়িয়ে আছে
বাবু কাকু আর তার কথা গুলো ,কি রে এলি।
মাঝে যখন একটু বেশি খেতাম ঠিক তখনই
বলতো আর খাস না পেটে ব্যাথা করবে,
আর তখন আমার দোষ দিবি আর বাবু কাকুর দোকানের খাবার খেয়ে এই হাল।
আমি বলতাম মরে গেলেও তোমার দোষ দেব না।
তখন থামিয়ে দিয়ে বলতো ও কথা মুখেও আনবি না। আমি বলতাম আর ভালো লাগে না
কত কাল খাবো বাবার পিঠে চেপে।
এই তো বড় হয়ে গেছিস যা সামনে বছর চাকুরী একখান পাবি তখন আবার ভুলে যাস না কিন্তু।
কি যে বলো কাকু তোমাকে ভোলা মাথায় আসেনা।
ঠিক তার কথাই মিলে গেল বছর ঘুরতেই
পেয়ে গেলাম ছোট খাট একটা চাকরি।
ভাবলাম কাকুর দোকানে এবার দোকানে এবার যাবোই খুশির খবর নিয়ে অনেক মিষ্টি সাথে নিয়ে । কিন্তু কাজের চাপ এত বেড়ে গেল কোন মতেই আর সময় করে উঠতে পারিনা একদিন সৌমেন ফোন করলো কেমন আছিস বললাম আছিরে খুব কাজের চাপে কিরে তুই তো আর এলিনা কাকুকে খুশির খবর দিতে তোর কথা কাকু খুব বলতো তোর খবর খোঁজ নিতো। তুই চাকরি পেয়েছিস শুনে কাকু কি মহা খুশি আর বলতে আমাকে হয় তো ভুলেই গেছে কাজের চাপে।জানিস আজ রাতে কাকু চলে গেছে বলে সৌমেন আর কথা বলতে পারছেনা আমি বললাম কি রে কি হয়েছে?
কাকু কোথায় চলে গেছে সৌমেন বলল সে আর আমাদের মাঝে নেই ফাঁকি দিয়ে চলে গেছে সমস্ত কাজ ফেলে ছুটে গেলাম।দেখা হলোনা সেখানেও তাকে শায়িত করা হয়েছে।কত কথা বলার ছিল কাজ হয় তো সেই কাকুকে দেখা করতে দিলো না খুশির খবর জানাতে দিলো না কত গল্প আর কত স্মৃতি সব তোমাকে নিয়ে তুমি ভালো থেকো বাবু কাকু।।