বাঙালির উৎসব বছর জুড়ে লেগেই থাকে, আর এই উৎসবের মুহূর্ত যেন মহালয়া থেকে শুরু হয়। পিতৃপক্ষের অবসান আর দেবী পক্ষের সূচনা এরই মধ্য দিয়ে বাঙালির অপেক্ষার পরিসমাপ্তি ঘটে। দেখতে দেখতে দূর্গা পূজা শেষ হয়ে গেলেও শেষ হয় না উৎসবের আমেজ তারপর লক্ষ্মী পূজা থেকে আর এক পর্ব শুরু হলো দীপাবলি পাঁচ দিন ধরে উদযাপন হয়, এর পর ধনতেরাস থেকে শুরু হয়, তারপর ভূত চতুর্দশী, দীপাবলি, গোবর্ধন পুজো এবং ভাইফোঁটা। কালীপূজোর শুভ সময় হচ্ছে কার্তিক মাসের অমাবস্যা তিথিতে এই সাথে সাথে চলে দীপা বলি প্রদীপ দানের মাধ্যমে অন্ধকার দূর করা হয় ।পিতৃপুরুষের শান্তি কামনা করা হয় কারণ এই দিন কিছু সময়ের জন্য স্বর্গে এর দ্বার খুলে যায়। যেহেতু ঘরে ঘরে দিক দান করা হয় তাই এই কালীপূজাকে দ্বীপান্বিতা কালীপূজাও বলা হয়ে থাকে। আর এই সময় লক্ষী পূজা করলে বিশেষ শুভ ফল লাভ হয়। দীপাবলিতে দীপ দানের আরেকটি কারণ হচ্ছে এই দিনে বা এই বিশেষ মুহূর্তে রামচন্দ্র রাবণকে পরাজিত করে সীতাকে নিয়ে অযোধ্যায় ফিরে এসেছিলেন। এই বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালে ১২ ই নভেম্বর বাংলা ২৫শে কার্তিক রবিবার দীপান্বিতা কালী পূজা বা দীপাবলি অনুষ্ঠিত হবে এই দিনে আমাবস্যার অন্ধকার দূর করার জন্য দিকে দিকে আলোকসজ্জা ও প্রদীপ দানের আয়োজন করা হয়ে থাকে। দীপান্বিতা কালীপূজার ঠিক দুই দিন আগে অর্থাৎ ১০ই নভেম্বর ধনতেরাস বা ধনত্রয়োদশী পড়েছে এবছর। আর ভূত চতুর্দশী পড়ছে এ বছর ১১ই নভেম্বর এই দিন ১৪ প্রদীপ জ্বালানো হয়ে থাকে এবং চৌদ্দ শাক খাওয়ার বিধান আছে। প্রচলিত আছে যে এই মুহূর্তে চৌদ্দ পুরুষেরা আমাদের এই লোকে ফিরে আসে এবং আমরা তাদেরকে উদ্দেশ্য করে চৌদ্দ প্রদীপ নিবেদন করি যাতে তারা স্বর্গের দ্বারে প্রবেশ করতে পারে। এবছর ভাইফোঁটা অর্থাৎ ভাতৃ দ্বিতীয়া পড়ছে ১৪ই নভেম্বর মঙ্গলবার এই দিনে বোনেরা ভাইদের মঙ্গল কামনায় একটি বিশেষ মঙ্গলটিকা প্রদানের জমির দয়ারে কাটা বিছিয়ে দেয় । এভাবে বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে আবহমান কাল ধরে পরিবারের মঙ্গল কামনায় এই উৎসব ও পার্বণ অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। বলাই যায় যে সারাতে দুর্গাপূজার সমাপ্তি ঘটলেও উৎসবের শেষ হয় না।