ত্রিলোচন সাহিত্য ভুবন সাপ্তাহিক সাহিত্য পত্রিকাপ্রত্যেক বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়।আপনার লেখা পাঠান : Shuvojitdutta12@gmail.com

Wednesday, August 26, 2020

 "কাদের_করেছো_পর"

-শুভ জিত দত্ত

যারা তোমার করলো বড়

তাদের দূরে ঠেলো,

সুখে দুঃখে ছিলো যারা

বাইরে তাদের ফেলো।


ছোটো থেকে পরম যত্নে

লালন করলো যারা,

বৃদ্ধাশ্রমে রাখলে তাদের

কেমন আছে তারা।


ভূলে গেলে তাদের তুমি

ছিলো যারা আপন,

এখন তুমি মস্ত বড়ো

তাদের করছো গোপন।


অভাব থেকে দূরে রেখে

যারা আনলো এখানে,

তাদের ছেড়ে কেমন করে

আছো তুমি ওখানে।


সম্পদ নিয়ে মহা ব্যস্ত 

ভুলো আছো কাদের,

যারা করেছে তোমার জন্যে

খোঁজ রাখো তাদের।।

Tuesday, August 25, 2020

 "হারিয়ে যাওয়া"


-শুভ জিত দত্ত


হঠাৎ করে রাগলে পরে

তোমায় লাগে ভালো,

খানিক বাদে বায়না ধরো

ঘুরে আসি চলো।

জলনা দিয়ে অবাক হয়ে

আকাশ চেয়ে দেখো,

সোনা রোদের হাসি টুকু

গায়ে একটু মেখো।

ছাদের কোনে মনে মনে

যখন গান গাইতে,

সারা দিনের ক্লান্তি শেষে

ভুলে যেতে খাইতে।

আমায় সাথে চলতে যখন

উদাস হয়ে থাকতে,

মনের কোণে হঠাৎ তুমি

কিছু ছবি আঁকতে।

আড়াল থেকে চেয়ে থাকি

তখন তুমি রাঁধতে,

তোমার চুলের পরশ নিতাম

যখন তুমি বাঁধতে।।


Monday, August 24, 2020

সার্থ হাসিল

 


"সার্থ হাসিল"

শুভ জিত দত্ত


আকাশ কুসুম চিন্তা নিয়ে

অবাক হয়ে ভাবি,

বললো নাতো অভাব দেখে

কিছু একটা খাবি।

সেদিন ছিলাম ওদের পাশে

ছুটে গেছি সুখে,

আমার অভাব দেখে ওরা

বলবে কিছু মুখে।

সার্থ নিয়ে সবাই চলে

যখন হাসিল হবে,

আবার কবে লাগতে পারে

খুঁজবে তোমায় তবে।

কারো অধীনে থাকলে পরে

খালি সুযোগ নেবে,

বুঝে শুনে একটু জেনে

চলবে তুমি ভেবে‌

ভুবন মাঝে জানার আছে

বোঝার আছে কিছু,

ঠকলে তুমি জানবে বেশি

চলবে ওরা পিছু।




Sunday, August 23, 2020

 অনুরাধার অনুপ্রেরণা-শুভ জিত দত্ত


দিন গুলো এভাবেই যাবে ভাবিনি কখনো একের পর এক পুরানো দিন গুলো পার করে কখন যে এখানে এসেছি, ফিরে তাকালেই খুব কষ্ট হয়।

তখন এস.এস.সি সবে মাত্র শেষ করলাম।আমি ছোট ছিলাম দায়িত্ব কাকে বলে কখনো বুঝতে দেয় নি বাবা ও বড় ভাই। তবু চেষ্টা করতাম বাবার সাথে সাথে থেকে যদি একটু শেখা যায় কিছু। এভাবে চলে যাচ্ছিল বড় ভাই সিন্ধান্ত নিল সে আলাদা থাকবে ।এই খবর বাবার কানে যাওয়ার সাথে সাথে তিনি ঠিক মেনে নিতে পারেনি। পড়াশোনা চালাতে পারবো কিনা ভাবিনি তার পর যাই হয়েযাক পড়াশোনা ছাড়িনি । চালিয়ে গেছি শত কাজের ভেতর বাবার সাথে সাথে সব কাজ করেছি বাবাকে একা হতে দিইনি কখনো।ক্রমে দায়িত্ব বাড়তে থাকলো ছেড়ে দিতে  হলো পড়াশোনা আস্তে আস্তে খামার আরোও বড় হলো ।বাবা মার সিদ্ধান্তে বিয়েটাও সেরে নিতে হলো। ঠিক বাবা মার পর অনুপ্রেরণা বেশি পেয়েছি সে আমার অনুরাধা ।একে একে বাবা মা ছেড়ে চলে যায় না ফেরার দেশে তখন সে আমার বাবা মার অভাব বুঝতে দেয় নি।সে আসার পর শুরু হয় আমার জীবনের পালা বদল ঘুরে দাঁড়াতে থাকে আমার ভাগ্যের চাকা।একটি খামার থেকে আমার পাঁচটি খামার আরো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে আমার কাছ থেকে টাটকা মাছ সবজি গবাদি পশু নিয়ে যায়। আমার অপূর্ণ আশা পূরণ হলো ঠিকই তবে অন্যের অধীনে নয় নিজের অধীনে।এখন আমার খামারে কাজ করে শত শত তরুণেরা জীবিকা নির্বাহ করছে।আর সবটা হয়েছে ইচ্ছা শক্তি ও ধৈর্যের জন্য। আমার ছেলেকে আর কখনো পাঠাবো না কারো অধীনে কাজ করার জন্য।একের পর এক বিভিন্ন পুরষ্কার পেতে শুরু করলাম তখন আমি সবার কাছে একটি অনুপ্রেরণা নাম সৌমেন দাস।সেই অভাব থেকে ঘুরে দাঁড়ানো আজ আমি এখানে।এখন ভাবলে কষ্ট হয় যেই দিন গুলো তে বাবা মার দুমুঠো ভাত জোটে নি।বড় ভাই দেখেও না দেখার ভান করেছে।শত অভাবের মাঝেও ছেড়ে যায় নি অনুরাধা।সে ছিল তাই আমি এখানে বার বার অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে যত বার হেরেছি ভাগ্যের সাথে খালি এই অভাব দেখো ঠিক কোথায় চলে যাবে আমার তখন ঘুরে দাঁড়াবোই।এই ছিল আমার ছোট্ট অনুপ্রেরণার গল্প।।

Saturday, August 22, 2020

 "প্রজাপতির অভিমান"

-শুভ জিত দত্ত

প্রজাপতি ছেয়ে গেছে

সারা আকাশ জুড়ে,

নতুন গানে গলা জড়িয়ে

গায়ছে নানা সুরে।

হঠাৎ করে রাগের চোটে

পাখির সাথে আড়ি,

খালি নাকি বলে ছিলো

কিসের তৈরি বাড়ি।

পাখি আবার বড়াই করে

তাহার তৈরি নিয়ে,

অভিমানী প্রজাপতি

থাকে বাড়ি গিয়ে ।

বনের পশুর দলের নেতা

হঠাৎ হুমকি দিলো,

পাখির বিচার করতে হবে

শপথ ওরা নিলো।

প্রজাপতির কষ্ট দেখে

সবাই এসে হাজির,

করতে বিচার পাখির দলের

এবার এসেছে নাজির।

রাগের পারদ গললো শেষে

শুনে খুশির কথা,

খুশির কথায় প্রজাপতি

উড়লো যথা তথা।।


Friday, August 21, 2020

 "ভুলের সাজা"

-শুভ জিত দত্ত

মাছেই মাছেই যুক্তি করে

প্লান করেছে ভারি,

সবাই মিলে তারা এবার

যব্দ করবে তারি।

মাছের খাবার খাবে বটে

শেষ করবে সবই,

শাস্তি দেবে এবার তাঁকে

মারবে ওরা খুবই।

পুঁটি টেংরা সাথে কাতলা

সঙ্গে আছে ইলিশ,

মিটিং করে ঘন্টা ধরে

সবাই আনে নালিশ।

রাজার জন্য নেইতো উপায়

 করবে একটু আহার,

সবাই মিলে গিয়ে শেষে 

করলো বেদম প্রহার।

মাছের রাজা বলেই সেকি

ভুল করেই যাবে,

অনেক হলো এবার তবে

মার এবার খাবে।।



Thursday, August 20, 2020

এসেছে শরৎ

 





"এসেছে শরৎ"

-শুভ জিত দত্ত


আকাশ মেতেছে খুশির ভেলায়

এসেছে নাকি শরৎ,

মেঘের সারি দলে দলে

আবার আসে ফেরত।

শিউলি ফুলের গন্ধ মেখে

কোথায় ছুটে চলে,

কাশের মাঠে বাতাস বইছে

অচেনা কারো ছলে।

সবুজ ঘাসের ফাঁকে ফাঁকে

শিশির জমে থাকে,

অনন্য ফুলে ছেয়ে গেছে

গন্ধ আসে নাকে।

সারা মেলে পাখির দলে

আঁকি বুকি খেলে,

নিয়ে সাথে বিকেল মাঝে

হঠাৎ হারিয়ে গেলে।

বরণ পর্ব চলেই আসে

নতুন সাজ গোজে,

উৎসব জুড়ে লেগেই থাকে

তোমার রুপের খোঁজে।।


Wednesday, August 19, 2020

 


বাবু কাকু-শুভ জিত দত্ত

প্রতিদিনের এক চিরন্তন অভ্যাস ছিল

কলেজটার ঠিক বাম পাশে একটা ছোট্ট দোকান

বাবু কাকু নামেও তার বেশ সুনাম।

তার দোকানের লুচিপুড়ি তো সেই নাম করা।

একটু পেটে না পড়লে ঠিক আড্ডাটা জমে না।

কত মানুষের পদধুলি পড়ত তার কি ঠিক আছে

সেই তো সেদিন কার ঘটনা বাবু কাকুর দোকানে

দেখলাম বিখ্যাত রাজনীতিবিদ সঙ্গে ডাক্তার

তারাও সুযোগ পেলে ছুটে আসে লোভ সামলাতে

পারে না ।আর আড্ডা তো আছেই বেশ জমপেশ

কাকুর দোকানে না গেলে দিনটাই মাটি

কেমন যেন নিরামিষি হয়ে যায় পুরো দিনটা।

কত মসলা আর সবজি সঙ্গে তার হাতের জাদু

দেখতে দেখতে কয়েকটা বছর জড়িয়ে আছে

বাবু কাকু আর তার কথা গুলো ,কি রে এলি।

মাঝে যখন একটু বেশি খেতাম ঠিক তখনই

বলতো আর খাস না পেটে ব্যাথা করবে, 

আর তখন আমার দোষ দিবি আর বাবু কাকুর দোকানের খাবার খেয়ে এই হাল।

আমি বলতাম মরে গেলেও তোমার দোষ দেব না।

তখন থামিয়ে দিয়ে বলতো ও কথা মুখেও আনবি না। আমি বলতাম আর ভালো লাগে না 

কত কাল খাবো বাবার পিঠে চেপে।

এই তো বড় হয়ে গেছিস যা সামনে বছর চাকুরী একখান পাবি তখন আবার ভুলে যাস না কিন্তু।

কি যে বলো কাকু তোমাকে ভোলা মাথায় আসেনা।

ঠিক তার কথাই মিলে গেল বছর ঘুরতেই 

পেয়ে গেলাম ছোট খাট একটা চাকরি।

ভাবলাম কাকুর দোকানে এবার দোকানে এবার যাবোই খুশির খবর নিয়ে অনেক মিষ্টি সাথে নিয়ে । কিন্তু কাজের চাপ এত বেড়ে গেল কোন মতেই আর সময় করে উঠতে পারিনা একদিন সৌমেন ফোন করলো কেমন আছিস বললাম আছিরে খুব কাজের চাপে কিরে তুই তো আর এলিনা কাকুকে খুশির খবর দিতে তোর কথা কাকু খুব বলতো তোর খবর খোঁজ নিতো। তুই চাকরি পেয়েছিস শুনে কাকু কি মহা খুশি আর বলতে আমাকে হয় তো ভুলেই গেছে কাজের চাপে।জানিস আজ রাতে কাকু চলে গেছে বলে সৌমেন আর কথা বলতে পারছেনা আমি বললাম কি রে কি হয়েছে? 

কাকু কোথায় চলে গেছে সৌমেন বলল  সে আর আমাদের মাঝে নেই ফাঁকি দিয়ে চলে গেছে সমস্ত কাজ ফেলে ছুটে গেলাম।দেখা হলোনা সেখানেও তাকে শায়িত করা হয়েছে।কত কথা বলার ছিল কাজ হয় তো সেই কাকুকে দেখা করতে দিলো না খুশির খবর জানাতে দিলো না কত গল্প আর কত স্মৃতি সব তোমাকে নিয়ে তুমি ভালো থেকো বাবু কাকু।।


 "প্রিয় নাদুকাকা"

-শুভ জিত দত্ত


নাদু কাকা দেখতে মোটা

চেহারা খানি বেশ,

মাথা ভরা আছে তাহার

অনেক ঘন কেশ।

কথার ঝুলি সঙ্গে রাখেন

বলেন মাঝে সাজে,

শুরু করলে কথার বুলি

থামে কোনো কাজে।

তাহার আছে অনেক সুনাম

যদি যায় খেতে,

এদিকে সেদিক ঘুরে ঘুরে

থাকেন তিনি মেতে।

বিরক্ত হলে কারো উপর 

তিনি রেগে যেতেন,

কোথাও কোনো কিছু হলে

দাওয়াত তিনি পেতেন।

রাগ করে তিনি আবার

গোমরা মুখে থাকেন,

একটু পরে ভুলে গিয়ে

তাকেই আবার ডাকেন।।


Tuesday, August 18, 2020

বিশিষ্ট আবৃত্তিকার শর্মিষ্ঠা মুখ্যার্জীর কন্ঠে শুভ জিত দত্তের কবিতা

 "ঘোষ মশাই"

-শুভ জিত দত্ত

ঘোষ বাড়ি দুধের খনি

সেথাই হাড়ি ভরা,

গোয়াল ভরা গরু আছে

দুধের থাকে কড়া।


তারা আবার সৃষ্টি করে

অনেক স্বাদের মিষ্টি,

দুধ দিয়ে তৈরি তাতে

আছে অনেক পুষ্টি।


ছানা দধি খাঁটি দুধের

করে তারা সন্দেশ,

দধি মিষ্টি কাঁধে করে

নিয়ে ছোটে দূরদেশ।


আরো করে ছানার পোলাও

খেতে লাগে ভালো,

বিয়ে বাড়ি জন্ম দিনে

সবাই খেতে চেলো।


ঘোষ মশাই নামে তাদের

সাবাই একটু ডাকে,

বাড়ি ভরা গরু তাদের

মাঠে ঘাটে থাকে।।



Monday, August 17, 2020

 "পোড়ো বাড়ি"

-শুভ জিত দত্ত


রায় বাবুর পোড়ো বাড়ি

ভূতের আসর বসে,

ওদিক থেকে সন্ধ্যা হলে

আওয়াজ ভেসে আসে।


রাত নামলেই ওরা আবার

ভোজন সেরে ওঠে,

কখন জানি হানা দেবে

বাবুর বাড়ির মাঠে।


গন্ধ পেলে একটু খানি

হঠাৎ ধেয়ে আসে,

দেখতে পেলে সামনে থেকে

ওমনি ঝেড়ে কাসে।


ওদের দলে আছে নাকি

মামদো হামদোর বাবা,

রেগে গেলে হঠাৎ করে

তিনি মারেন থাবা।


ভূতের ভয়ে কাঁপতে থাকে

বাবুর বাড়ির লেঠেল,

কথাই কথাই বাবু বলতো

সাহস ওদের অঢেল।


Sunday, August 16, 2020

 "বর্ষার দিনে"

-শুভ জিত দত্ত


শুভ্র সকালে বৃষ্টি মুখর

থৈথৈ জলে ভরে,

ভেসে যায় জলে ভিজে

নিয়ে মনের তোরে।


ক্লান্তি গুলো দূরে সরে

যখন বৃষ্টি আসে, 

মন খারাপ ছুটি নিয়ে

জল হয়ে ভাসে।


ইচ্ছে করে সারা দিতে

ভিজে যেতে কালকে,

হারিয়ে যাওয়া সুযোগ নিতে

এমন সময় চায়কে।


কাঁদা জলে ভরে যাবে

থেমে রবে প্রান্তরে,

অথৈ ব্যাথা যাবে সরে 

খানিক মনের অন্তরে।


বর্ষার প্রতি সময় গুলো

মনে রাখার মতো

বর্ষা চলে গেলেই পরে 

দুঃখ বাড়ে ততো।।



Saturday, August 15, 2020

 "জামাই বাবু"

-শুভ জিত দত্ত


দাদা বাবু সেজে গুজে

যাবে বিয়ে করতে,

সারা পাড়া ঘুরে ঘুরে

কিছু মানুষ বলতে।

যেতে রাজি হয়না বলে

বাড়ি বয়ে ডাকতে,

সহজে রাজি হলো নাতো

গরুর গড়ি চড়তে।

শালা শালী যুক্তি করে

কাছা এবার খুলবে,

এটে নিয়ে বুদ্ধি খানি

সফল করে ফেলবে।

খাওয়া দাওয়া দেখে শুনে

করে দাদা বাবু,

শালীর হাতের শরবত খেয়ে

বাবু হয় কাবু।

এদিক ওদিক দেখে শুনে

তিনি সুযোগ খোঁজে,

দৌড় মারে শেষে এসে

কাছা খানি গুঁজে।।


Friday, August 14, 2020

 "কাকুর ছেলে"

-শুভ জিত দত্ত


পাশের বাড়ির কাকুর ছেলে

দেখতে শুনতে ভালা,

তাহার গায়ের রং টি বাবা

একটু খানি কালা।


কথাই কথাই লাগায় ঝগড়া

বলতে গেলে বাধা,

দেখে শুনে লাইন মারে

পটাই খালি রাধা।


কাকু খালি চিন্তাই থাকে

কবে হবে সাধা,

ছেলে বড় হলো তবে

থেকে গেলো গাধা।


চাঁপা বাজি করতে পারে

এরওর সাথে ভালোই,

অতিষ্ঠ থাকে তাহার উপর

পাশে থাকে যতোই।।