আমার সম্পাদনায় ত্রিলোচন সাহিত্য ভুবনের প্রথম শরৎ সংখ্যা
বৌমার জারিজুরি
-শুভ জিত দত্ত
বৌমা আমার সবার থেকে
একটু বেশি চালু,
ভাতের সাথে খাবে সেতো
কয়েক টুকরা আলু।
কথা বলে সবার থেকে
একটু বুঝে শুনে,
বুদ্ধি করে চলতে পারে
হিসাব করে গুনে।
সবার মুখে বৌমার নামে
সুনাম করে বলে,
বিচার করে বলতে পারে
দেখে শুনে চলে।
দেখতে শুনতে সবার সেরা
বলে আবার ওড়াই,
সময় পেলে বৌমা আমার
ঘুড়ি আবার উড়াই।
রান্না বান্না করে আবার
গানের গলা ভালোই,
বৌমা দেখতে ভালো কিন্তু
ছেলে আমার কালোই।
"গল্পের ঝুলি"
শুভ জিত দত্ত
দাদুর আছে মস্ত বড়
গল্পের একটা ঝুলি,
সেখান থেকে তিনি শুধু
বলেন গল্পের বুলি।
আমরা কজন ঘিরে ধরে
দাদুর গল্প শুনি,
বিকলে হলে দাদুর আসার
সময় শুধু গুনি।
বিচিত্র কতো গল্প গুলো
আছে সেই ঝুলিতে,
শুনতে শুনতে গল্প গুলো
যেতাম সব ভুলিতে।
মায়ের হাতে জুটতো বকা
যখন যেতাম বাড়ি,
খেতে বসলে মায়ের স্বভাব
দিতো ভরে হাড়ি।
দাদুর কথা বলে পড়লে
বেশি করে যাবি,
মা বলতো দাদুর কাছে
আছে জ্ঞানের চাবি।
মহারাজার হুকুম
-শুভ জিত দত্ত
মহা বোঝা পরলো কাঁধে
করতে হবে শিকার,
বয়স যখন হলো বারো
থাকবো কিআর বেকার।
মহা রাজা হুকুম যখন
করতে হবে তামিল,
শিকার ধরার কাজে এবার
হতে হবে শামিল।
এখন বাবা সাথে থাকে
মহারাজার শেপাই ,
আমার এখন পোয়া বারো
কেআর আমার খেপাই।
যেদিন আমি আনব ধরে
মস্ত বড় গরু,
মহা রাজা ভুলেই তিনি
খাবে না আর তরু।
সেদিন থেকে মন্ত্রী হবো
পাবো আস্তো বাড়ি,
রাজ্য ঘুরে তখন আমি
করবো খবর দারি।
অধরা তুমি
শুভ জিত দত্ত
তোমার জন্য যতোটা পেরেছি
করেছি সাধ্য মতো,
তবু তুমি রয়ে গেলে অধরা
এই কি সেই তুমি,
হাজারো স্বপ্ন গুলো যাকে নিয়ে
দেখতে দেখতে সময়টা কাটতো।
তুমি হয়তো কিছু বলো নি
সব কিছুই তো আমার,
মনের খোরাক ছাড়া কিছুনা।
জানো তুমি যদি হাত
ধরতে তবে পূর্ণতা পেতো,
মনের জমানো কিছু স্বপ্ন।
সব কথাই নিজের ভেতর
কিছুটা অজান্তেই রেখে দিই,
কষ্টটা আমারই থাক।
-শুভ জিত দত্ত
হঠাৎ করে সেদিন নাকি
সাঁতরে ছিলেন বেশি,
তখন থেকে তিনি শুধু
দোষটা দিলেন বেশি।
শিয়াল নাকি তাকে নিয়ে
নদীতে গিয়ে ছিলেন ,
তখন থেকে রাজা মশাই
তাকে করলো ভিলেন।
কাশতে কাশতে গলা দিয়ে
রক্ত পড়ে শুধু ,
বদ্ধি মশাই বুদ্ধি দিলো
খেতে হবে মধু।
পেটে পড়ে নতুন ওষুধ
কাশি একটু থামলো,
রাজা মশাই রাগের পারদ
একটু কিছু কমলো।
শিয়াল এখন মহা খুশি
আনন্দে নেচে ওঠে,
নাচতে নাচতে তিনি আবর
একটু বেঁচে ওঠে।
তোমার আগমনী বার্তা
-শুভ জিত দত্ত
তুমি যখন এসো ধরায়
শুভ আশিষ নিয়ে,
ভালো রেখো সবার ওমা
ভুবন মাঝে গিয়ে।
নানা সাজে সেজে হঠে
এলো আগমনী,
চারিদিকে বেজে ওঠে
শুনি ওগো ধ্বনি।
শরৎ আসে নীল মেঘে
বারে আনা গোনা,
মনের মাঝে নতুন কিছু
স্বপ্ন গুলো বোনা।
আসবে তুমি সাথে নিয়ে
ভালো লাগার সুবাস,
গড়ে দিও নতুন করে
চিরো শান্তির আবাস।
তোমার আশার প্রহর গুনে
সময় কেটে গেলে,
কাশের মাঠে পরশ নিয়ে
চলছে হেসে খেলে।।
গাছের আছে জীবন
-শুভ জিত দত্ত
ওদের আছে তোমার মতো
আস্তো একটা জীবন,
তাদের লতায় পাতায় তৈরি
ঔষধ করো সেবন।
ছায়া দিয়ে আগলে রাখে
আছে অনেক পাতা ,
সবার থেকে ওরা আবার
অনেক বড়ো দাতা।
জীবন বাঁচে তাদের ফলে
আছে পুষ্টি গুণ,
খেতে লাগে অনেক ভালো
সাথে মিষ্টি গুণ।
তবু তোমার তাদের কাটো
যখন ইচ্ছে হলো,
অনেক হলো এবার তবে
ওদের কথা বলো।
ওদের অনেক আঘাত লাগে
যখন তোমার কাটো,
অনেক গরম যখন লাগে
ওদের ছায়ায় হাটো।।
ভালুক ঘটক
শুভ জিত দত্ত
বনে নাকি হঠাৎ করে
হৈচৈ পড়ে গেছে,
ভালুক করছে ঘটক গিরি
সবাই লাগলো পেছে।
বিয়ে এবার দিতে হবে
পড়লো বিশাল লাইন,
সবার থেকে একটা করে
নিচ্ছেন তিনি সাইন।
এদিক ওদিক সেদিক থেকে
সবাই ছুটে আসে,
তিনি এখন বিপদে পড়ে
জায়গা দিলেন ঘাসে।
তিনি এখন মহা বিপদে
গেলেন রাজার কাছে,
শুনে নিয়ে রাজা মশাই
বললো ওঠো গাছে।
বিয়ে তোমার দিতে হবে
হয়েছো যখন ঘটক ,
আমার সেনা তৈরি আছে
করবে তোমার আটক।
শিয়াল কাজী