ত্রিলোচন সাহিত্য ভুবন সাপ্তাহিক সাহিত্য পত্রিকাপ্রত্যেক বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়।আপনার লেখা পাঠান : Shuvojitdutta12@gmail.com

Wednesday, August 19, 2020

 


বাবু কাকু-শুভ জিত দত্ত

প্রতিদিনের এক চিরন্তন অভ্যাস ছিল

কলেজটার ঠিক বাম পাশে একটা ছোট্ট দোকান

বাবু কাকু নামেও তার বেশ সুনাম।

তার দোকানের লুচিপুড়ি তো সেই নাম করা।

একটু পেটে না পড়লে ঠিক আড্ডাটা জমে না।

কত মানুষের পদধুলি পড়ত তার কি ঠিক আছে

সেই তো সেদিন কার ঘটনা বাবু কাকুর দোকানে

দেখলাম বিখ্যাত রাজনীতিবিদ সঙ্গে ডাক্তার

তারাও সুযোগ পেলে ছুটে আসে লোভ সামলাতে

পারে না ।আর আড্ডা তো আছেই বেশ জমপেশ

কাকুর দোকানে না গেলে দিনটাই মাটি

কেমন যেন নিরামিষি হয়ে যায় পুরো দিনটা।

কত মসলা আর সবজি সঙ্গে তার হাতের জাদু

দেখতে দেখতে কয়েকটা বছর জড়িয়ে আছে

বাবু কাকু আর তার কথা গুলো ,কি রে এলি।

মাঝে যখন একটু বেশি খেতাম ঠিক তখনই

বলতো আর খাস না পেটে ব্যাথা করবে, 

আর তখন আমার দোষ দিবি আর বাবু কাকুর দোকানের খাবার খেয়ে এই হাল।

আমি বলতাম মরে গেলেও তোমার দোষ দেব না।

তখন থামিয়ে দিয়ে বলতো ও কথা মুখেও আনবি না। আমি বলতাম আর ভালো লাগে না 

কত কাল খাবো বাবার পিঠে চেপে।

এই তো বড় হয়ে গেছিস যা সামনে বছর চাকুরী একখান পাবি তখন আবার ভুলে যাস না কিন্তু।

কি যে বলো কাকু তোমাকে ভোলা মাথায় আসেনা।

ঠিক তার কথাই মিলে গেল বছর ঘুরতেই 

পেয়ে গেলাম ছোট খাট একটা চাকরি।

ভাবলাম কাকুর দোকানে এবার দোকানে এবার যাবোই খুশির খবর নিয়ে অনেক মিষ্টি সাথে নিয়ে । কিন্তু কাজের চাপ এত বেড়ে গেল কোন মতেই আর সময় করে উঠতে পারিনা একদিন সৌমেন ফোন করলো কেমন আছিস বললাম আছিরে খুব কাজের চাপে কিরে তুই তো আর এলিনা কাকুকে খুশির খবর দিতে তোর কথা কাকু খুব বলতো তোর খবর খোঁজ নিতো। তুই চাকরি পেয়েছিস শুনে কাকু কি মহা খুশি আর বলতে আমাকে হয় তো ভুলেই গেছে কাজের চাপে।জানিস আজ রাতে কাকু চলে গেছে বলে সৌমেন আর কথা বলতে পারছেনা আমি বললাম কি রে কি হয়েছে? 

কাকু কোথায় চলে গেছে সৌমেন বলল  সে আর আমাদের মাঝে নেই ফাঁকি দিয়ে চলে গেছে সমস্ত কাজ ফেলে ছুটে গেলাম।দেখা হলোনা সেখানেও তাকে শায়িত করা হয়েছে।কত কথা বলার ছিল কাজ হয় তো সেই কাকুকে দেখা করতে দিলো না খুশির খবর জানাতে দিলো না কত গল্প আর কত স্মৃতি সব তোমাকে নিয়ে তুমি ভালো থেকো বাবু কাকু।।


 "প্রিয় নাদুকাকা"

-শুভ জিত দত্ত


নাদু কাকা দেখতে মোটা

চেহারা খানি বেশ,

মাথা ভরা আছে তাহার

অনেক ঘন কেশ।

কথার ঝুলি সঙ্গে রাখেন

বলেন মাঝে সাজে,

শুরু করলে কথার বুলি

থামে কোনো কাজে।

তাহার আছে অনেক সুনাম

যদি যায় খেতে,

এদিকে সেদিক ঘুরে ঘুরে

থাকেন তিনি মেতে।

বিরক্ত হলে কারো উপর 

তিনি রেগে যেতেন,

কোথাও কোনো কিছু হলে

দাওয়াত তিনি পেতেন।

রাগ করে তিনি আবার

গোমরা মুখে থাকেন,

একটু পরে ভুলে গিয়ে

তাকেই আবার ডাকেন।।


Tuesday, August 18, 2020

বিশিষ্ট আবৃত্তিকার শর্মিষ্ঠা মুখ্যার্জীর কন্ঠে শুভ জিত দত্তের কবিতা

 "ঘোষ মশাই"

-শুভ জিত দত্ত

ঘোষ বাড়ি দুধের খনি

সেথাই হাড়ি ভরা,

গোয়াল ভরা গরু আছে

দুধের থাকে কড়া।


তারা আবার সৃষ্টি করে

অনেক স্বাদের মিষ্টি,

দুধ দিয়ে তৈরি তাতে

আছে অনেক পুষ্টি।


ছানা দধি খাঁটি দুধের

করে তারা সন্দেশ,

দধি মিষ্টি কাঁধে করে

নিয়ে ছোটে দূরদেশ।


আরো করে ছানার পোলাও

খেতে লাগে ভালো,

বিয়ে বাড়ি জন্ম দিনে

সবাই খেতে চেলো।


ঘোষ মশাই নামে তাদের

সাবাই একটু ডাকে,

বাড়ি ভরা গরু তাদের

মাঠে ঘাটে থাকে।।



Monday, August 17, 2020

 "পোড়ো বাড়ি"

-শুভ জিত দত্ত


রায় বাবুর পোড়ো বাড়ি

ভূতের আসর বসে,

ওদিক থেকে সন্ধ্যা হলে

আওয়াজ ভেসে আসে।


রাত নামলেই ওরা আবার

ভোজন সেরে ওঠে,

কখন জানি হানা দেবে

বাবুর বাড়ির মাঠে।


গন্ধ পেলে একটু খানি

হঠাৎ ধেয়ে আসে,

দেখতে পেলে সামনে থেকে

ওমনি ঝেড়ে কাসে।


ওদের দলে আছে নাকি

মামদো হামদোর বাবা,

রেগে গেলে হঠাৎ করে

তিনি মারেন থাবা।


ভূতের ভয়ে কাঁপতে থাকে

বাবুর বাড়ির লেঠেল,

কথাই কথাই বাবু বলতো

সাহস ওদের অঢেল।


Sunday, August 16, 2020

 "বর্ষার দিনে"

-শুভ জিত দত্ত


শুভ্র সকালে বৃষ্টি মুখর

থৈথৈ জলে ভরে,

ভেসে যায় জলে ভিজে

নিয়ে মনের তোরে।


ক্লান্তি গুলো দূরে সরে

যখন বৃষ্টি আসে, 

মন খারাপ ছুটি নিয়ে

জল হয়ে ভাসে।


ইচ্ছে করে সারা দিতে

ভিজে যেতে কালকে,

হারিয়ে যাওয়া সুযোগ নিতে

এমন সময় চায়কে।


কাঁদা জলে ভরে যাবে

থেমে রবে প্রান্তরে,

অথৈ ব্যাথা যাবে সরে 

খানিক মনের অন্তরে।


বর্ষার প্রতি সময় গুলো

মনে রাখার মতো

বর্ষা চলে গেলেই পরে 

দুঃখ বাড়ে ততো।।



Saturday, August 15, 2020

 "জামাই বাবু"

-শুভ জিত দত্ত


দাদা বাবু সেজে গুজে

যাবে বিয়ে করতে,

সারা পাড়া ঘুরে ঘুরে

কিছু মানুষ বলতে।

যেতে রাজি হয়না বলে

বাড়ি বয়ে ডাকতে,

সহজে রাজি হলো নাতো

গরুর গড়ি চড়তে।

শালা শালী যুক্তি করে

কাছা এবার খুলবে,

এটে নিয়ে বুদ্ধি খানি

সফল করে ফেলবে।

খাওয়া দাওয়া দেখে শুনে

করে দাদা বাবু,

শালীর হাতের শরবত খেয়ে

বাবু হয় কাবু।

এদিক ওদিক দেখে শুনে

তিনি সুযোগ খোঁজে,

দৌড় মারে শেষে এসে

কাছা খানি গুঁজে।।


Friday, August 14, 2020

 "কাকুর ছেলে"

-শুভ জিত দত্ত


পাশের বাড়ির কাকুর ছেলে

দেখতে শুনতে ভালা,

তাহার গায়ের রং টি বাবা

একটু খানি কালা।


কথাই কথাই লাগায় ঝগড়া

বলতে গেলে বাধা,

দেখে শুনে লাইন মারে

পটাই খালি রাধা।


কাকু খালি চিন্তাই থাকে

কবে হবে সাধা,

ছেলে বড় হলো তবে

থেকে গেলো গাধা।


চাঁপা বাজি করতে পারে

এরওর সাথে ভালোই,

অতিষ্ঠ থাকে তাহার উপর

পাশে থাকে যতোই।।

 


"আমার দেশ"

-শুভ জিত দত্ত


স্বদেশ আমার স্বাধীন ভূমি

যেথায় ডানা মেলি,

যখন তখন যেথানে সেখানে

ইচ্ছে হলেই খেলি।


হতে পারি বাঁধন হারা

আমি আমার দেশে,

বলতে পারি অনেক কথা

একটু আমি হেসে।


করেতে পারি গলা ছেড়ে

দেশের জন্য চিৎকার,

ক্ষতি করলে আমার দেশের

দিতে পারি ধিৎকার।


বলতে পারি গর্ব করে

আমার দেশের কথা,

দেখতে পারি দুচোখ মেলে

আমার দেশের গাঁথা।।





Wednesday, August 12, 2020

 "ছায়ার মাঝে"

-শুভ জিত দত্ত


তোমার খুঁজে ফিরি আমি

কোন অজানা দেশে

যখন নীরবে থাকি বসে।


সময় কখন মনে প্রানে

তোমাকে চায় পেতে

এই শ্রাবণ আষাঢ় মাসে।


যখন আকাশ মেঘে ঢাকে

পড়ন্ত বিকেলে বেলায়

তুমি হঠাৎ এসো অনায়াসে।


থাকবো বসে ছায়ার সাথে

যেখানে তুমি আসতে

কথা হতো নানা আভাসে।



নির্জনে বসে থাকতে একাকী

আসতাম শেষে আমি

কথা দিয়েছি তোমার আশ্বাসে।

 


"পাশের পাড়া"

-শুভ জিত দত্ত

পাশের পাড়ার মানুষ গুলো

বড়াই করে বলে,

তাঁরাই নাকি সবার থেকে

সেরা বাক্য বলে।


দেখতে শুনতে তাঁরাই নাকি

সবার থেকে সেরা,

রুপে গুণে তারা আবার

হচ্ছে বিশ্ব সেরা।


বললে পরে মুখের পড়ে

ওমনি চেপে ধরে,

এদিক ওদিক দেখে শুনে

গলা টিপেই ধরে।


রাস্তার ধারে দেখা হলে

মুখ ঘুরিয়ে রাখে,

ওরাই আবার ভুল করলে

মুখে কাঁদা মাখে।


ওরাই নাকি ভালো আছে

পাশের পাড়ার থেকে,

গর্ব করে বলতে পারে

তারা মন থেকে।।







  


Tuesday, August 11, 2020

"ননী বাবুর রান্না ঘর"

--শুভ জিত দত্ত

বাবুর বাড়ি রান্না ঘরে

হরেক পদে ঠাসা,

ননী বাবুর হাতের ছোঁয়ায়

রান্না হয় খাসা।

মসলা আছে কয়েক প্রকার

দিল্লি থেকে আনা,

জিরে থেকে শুরু করে

আছে আনাচ দানা।

সকাল থেকে শুরু হয়ে

চলছে রান্না বান্না,

একটু বেশি দিলেই কিছু

তিনি আবার খান্না।

কসা মাংস সরষে ইলিশ

শেষে আছে দই,

খাওয়া দাওয়া হলো তবে

টক গেল কই।

পস্ত দিয়ে রাঁধেন তিনি

কোনা বাড়ির আলু,

তিনি আবার খান না একা

থাকে সাথে লালু।।

 


"রাগের চোটে"

--শুভ জিত দত্ত

বাবু সোনা রেগে গেলে

কিছু ভেঙে শোনে,

কোন কিছু বলে না যে

অংক খালি গোনে।

রাগ করে বলে না যে

কারো সাথে কথা ,

গোমড়া মুখে থাকে যে সে 

খেলনা নিয়ে তথা।

কোন কথায় ভোলে না সে

চাই তার নাটাই,

বানাবে সে নানা ঘুড়ি

মাথা তো সে খাটাই।

নানা ছুতোয় যাবে মাঠে

ধরতে গেলেই আপত্তি,

মা তাই একটু গেলেই রেগে

বাধে যত বিপত্তি।

সারা পাড়া ঘুরে শেষে

আসে কান্ড করে,

সন্ধ্যা হলে ঘুমিয়ে পড়ে

মা কে ধরে আঁকরে।।


Monday, August 10, 2020

ছড়া কবিতা

 


"বিড়াল জুটি"
--শুভ জিত দত্ত
টুনির ছিল বিড়াল দুটি
দেখতে সাদা কালো,
চুপটি করে বসে থাকে
স্বভাব ওদের ভালো।
লেজ গুটিয়ে খেতে বসে
বেড়ে দিলেই হলো,
ইঁদুর গুলো ভয়ে থাকে
হঠাৎ বিড়াল এলো।
কখন আবার খাবে গিলে
এটাই কাল হলো ,
রাত হলে জেগে থাকে
নজর সজাগ ছিলো।
ভয়ে ভয়ে খাবার খেতে
আসে ইঁদুর গুলো,
পড়লে ধরা ওদের হাতে
কঠিন শাস্তি দিলো।
দিন হলেই ঘুমিয়ে পড়ে
একটু ক্লান্ত হলো,
খেলতে দিলেই খুশি খুব
মিলো আর হুলো।

Sunday, August 9, 2020

 


"ভাত খাবনা"


--শুভ জিত দত্ত


যত বায়না ভাতের সাথে

কত রকম অজুহাত,

নানা রকম বাহানা শেষে

খোকা হয় কাত।

ভাত খেতে খাটনি বেশি

তাই সে খাবেনা,

ঘুরতে ঘুরতে ক্লান্ত হয়ে

মা হাল ছাড়েনা ।

নিত্য নতুন কাহিনী শুনে

যদি খেতে চায়,

কোন কিছুতে ভোলে না

শুধু ছুটে যায়।

খোকা খালি হেসে বলে

ভাত আমি খাবনা,

মা তাই রেগে বলে

পার্কে নিয়ে যাবনা।

খাওয়া নিয়ে ঝগড়া টা

চলছে বহু কাল,

খোকা তাই না খেয়ে

হচ্ছে বেহাল।