ত্রিলোচন সাহিত্য ভুবন সাপ্তাহিক সাহিত্য পত্রিকাপ্রত্যেক বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়।আপনার লেখা পাঠান : Shuvojitdutta12@gmail.com

Monday, October 5, 2020

ছোট গল্প

একটা দড়ির কথা

...................................

আমার যত দূর মনে আছে আমি তখন পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ি। আমার স্কুলের প্রতি আমার একটা ভালো লাগা জন্মেছিলো। আমার স্কুলে যেতে খুব ভালো লাগতো।আর খুব মনযোগ সহকারে শিক্ষকদের কথা শুনতাম। পড়াশোনায় খুব ভালো ছিলাম না।ঝড় বৃষ্টি যাই হোক আমি ঠিক সময়ে স্কুলে পৌঁছে যেতাম।সেই জন্য শিক্ষকরা আমার খুব প্রশংসা করতো।সেদিন শিক্ষক সবার কথা শুনছিলো কে কি হতে চাই ,কে কি করতে ভালোবাসে ।সবাই তাদের ভালোলাগা ও ভবিষ্যৎ কি করতে চাই সে সব কথাই বলছিলো।তবে সব থেকে আলাদা ছিলো সৌমেন সে পশুপাখি খুব ভালোবাসতো তার এই পশুপাখির প্রতি এতো মমতা দেখে তার বাবা তাকে একটি ছাগলের বাচ্চা কিনে দেয়।তার কোন ভাই ছিলোনা সে ছাগল টিকে নিজের ভাইয়ের মতো ভালবাসতো। ভালবেসে ছাগলটির নাম দিয়েছিলো মিনি।সে তার চোখের এক মুহুর্তের জন্যও মিনি কে আড়াল হতে দিতো না ।তার বাবার গরুর খামার ছিলো তিনি যখন গরু গুলোর জন্য খাবার আনতেন সাথে মিনি জন্য আনতে ভুলতেন না।বাবা আসলে দৌড়ে গিয়ে খাবার গুলো নিয়ে ছুটে যেত মিনির কাছে।সে যখন স্কুলে যেত তখন সে একটা দড়িতে বেঁধে রেখে যেতো সে জেনো কোথাও হারিয়ে না যায়। সৌমেনের আদর স্নেহে সে ধীরে ধীরে বড় হতে শুরু করলো।তার বাবা ছিল একজন পশুর ব্যাপারী পাশাপাশি নিজের বাড়িতে পশু পালন করতেন। সৌমেন বেশির ভাগ সময় কাটতো মিনির সাথে।তাই তার প্রতি গভীর মায়া জন্মেছিল। তাকে ছেড়ে কোন আত্মীয় বাড়ি গিয়ে একদিনও থাকতে পারতো না।রাতে ঘুমানোর সময় তাকে এক ঘরে নিয়ে ঘুমাতো।তাকে নিজ হাতে স্নান করাতো সে।বাবার সাথে মাঠে গেলে তাকে সাথে নিয়ে যেতো দড়িতে বেঁধে রাখতো যাতে কোথাও চলে না যাই। বেশ বড় হয়ে গেছে মিনি অনেক লোক দেখতে আসতো তাকে। সৌমেন তখন বুঝতে পারি নি কেন দেখতে আসতো।

সেদিন শনিবার স্কুলে যেতে হবে।সেদিন সকাল থেকে সৌমেন এর মন কেন যেন খুব খারাপ।মিনি কে বেঁধে রেখে গেল একটু আদর করে।কেন যেন ক্লাসে তার ঠিক মন বসছে না ।স্কুল ছুটি শেষে সবাই যখন হৈ হুল্লোড় করতে করতে বাড়ি আসছিলো তখন তার মন কেন যেন খুব খারাপ লাগছিলো।বড়ি এসে দেখে মিনির গলার দড়িটা পড়ে আছে ।মিনি কে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না ।সৌমেন দড়ি টা নিয়ে দৌড়ে ছুটে গেল বাবার কাছে ।বাবা আমার মিনি কই?তোর মিনি কে ওরা নিয়ে গেছে আমি তোকে একটা নতুন বাচ্চা ছাগল কে এনে দেব।সৌমেন এর কান্না কেউ আর থামাতে পারেনা।সেদিন সে ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করেনি।দড়ির দিকে তাকিয়ে বার বার কেঁদেছে।এখন খুব যত্নে রয়েছে সেই দড়িটা।দড়িটার দিকে তাকালে মনে পড়ে সেই মিনির কথা। শ্রেণী শিক্ষকও সৌমেনের কথা শুনে চোখেন জল‌ আটকে রাখতে পারলেন না তার এই মিনির কথা শুনে।এখনো দড়িটা তার বিছানার পাশে বড় যত্নে আছে।।
 

Thursday, October 1, 2020


 "সোনালী স্বদেশ"

শুভ জিত দত্ত


সোনা দিয়ে গড়া ও ভাই

এই আমাদের দেশ,

সবার সেরা জন্ম ভূমি

দেখতে লাগে বেশ।


আলো ছায়া দিয়ে সে তো

সবার করে লালন,

আগলে রাখে মাতৃ স্নেহে

করে মোদের পালন।


সবুজ শ্যামল প্রান্ত জোরা

রুপের ছটায় ভরা,

অতিথি পাখি মুগ্ধ হয়ে

দিলো এবার ধরা।


আকাশ দেখে ক্লান্তি গুলো

বিদায় যখন নেবে,

আমার এদেশ কতো মধুর

তখন দেখো ভেবে।


পাহাড় নদী ছেয়ে আছে

আমার দেশের পথে,

যেথায় সেথায় যেতেই পারো

চরে সোনার রথে।





Sunday, September 27, 2020

 শীতের ছুটি


বেশ কয়েক মাস হলো বড় ছুটির খোঁজ নেই। বন্ধুরা সবাই মিলে আর খেলার সময় টুকু হয়ে ওঠে না।সারা দিন পড়ার চাপ তা ছাড়া বাবা মা আর শিক্ষকরা তো আছেই।সবার একটাই কথা প্রথম হতেই হবে। আমার কথা হলো সবাই যদি প্রথম হবে দ্বিতীয়টা কে হবে।এতো চাপ শেষে মাথাটাই না বিগরে যাই।যতো দূর শুনেছি এর ওর কাছে নামি দামি লোকরে নাকি বেশি পড়াশোনাও জানে না।তাহলে আমরাই বা কি করবো এতো পড়াশোনা করে।যদি একটু ঠিক খেলতেই না পারি।যাই হোক সামনে শীত কাল অনেক আইডিয়া ঘুরছে মাথায়। কতদিন পর সব বন্ধুরা মিলে আবার হৈ হুল্লোড় করবো ভাবতেই ভালো লাগে। স্কুল থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে নজর রাখতাম খেজুর গাছ গুলোর দিকে।

শীতের ছুটি পেলেই অভিযান শুরু করতে হবে।মাঝে মাঝে মনে হয় রসের হাঁড়ি গুলো আমার দিকে তাকিয়ে আছে।সবাই যখন শীতে কনকন করে কাঁপে আমরা বন্ধুরা তখন দাপাদাপি করি।তখন আর কে কি বললো মাথায় থাকে না।বাড়ি ফিরতে দেরি হলেই মা লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে থাকতো চটাম চটাম করে পিঠে পড়তো।তার পরও ভালো লাগা বলতে এই যে সারাদিন দুষ্টুমি আর দিন শেষে মার খাওয়া পর কিন্তু রাতে মা ঠিকই বুকে জড়িয়ে ধরতো।গ্রামের দুষ্টু ছেলে বলতে আমরাই ছিলাম এমন কোন কাজ ছিল না যে আমার করি নি।আর ছুটি এলেই এভাবে কাটতো দিন গুলো আর পিকনিক তো ছিল সপ্তাহে একটা হয় খিচুড়ি না হয় ডিম ভাত।কন কনে শীতে পিকনিক বেশ জমতো আমাদের বাগানে ছোট্ট একটা হারিকেন নিয়ে। মাঝে মাঝে কেউ তো ভূত ভূত বলে চিৎকার করে উঠতো। খুব মজাদার ছিল সেই শীতের ছুটির দিন গুলো।।

Thursday, September 24, 2020

 বৌমার জারিজুরি

-শুভ জিত দত্ত


বৌমা আমার সবার থেকে

একটু বেশি চালু,

ভাতের সাথে খাবে সেতো

কয়েক টুকরা আলু।


কথা বলে সবার থেকে

একটু বুঝে শুনে,

বুদ্ধি করে চলতে পারে

হিসাব করে গুনে।


সবার মুখে বৌমার নামে

সুনাম করে বলে,

বিচার করে বলতে পারে

দেখে শুনে চলে।


দেখতে শুনতে সবার সেরা

বলে আবার ওড়াই,

সময় পেলে বৌমা আমার

ঘুড়ি আবার উড়াই।


রান্না বান্না করে আবার

গানের গলা ভালোই,

বৌমা দেখতে ভালো কিন্তু

ছেলে আমার কালোই।


 


Sunday, September 20, 2020

 "গল্পের ঝুলি"

শুভ জিত দত্ত


দাদুর আছে মস্ত বড়

গল্পের একটা ঝুলি,

সেখান থেকে তিনি শুধু

বলেন গল্পের বুলি।


আমরা কজন ঘিরে ধরে

দাদুর গল্প শুনি,

বিকলে হলে দাদুর আসার

সময় শুধু গুনি।


বিচিত্র কতো গল্প গুলো 

আছে সেই ঝুলিতে,

শুনতে শুনতে গল্প গুলো 

যেতাম সব ভুলিতে।


মায়ের হাতে জুটতো বকা

যখন যেতাম বাড়ি,

খেতে বসলে মায়ের স্বভাব

দিতো ভরে হাড়ি।


দাদুর কথা বলে পড়লে

বেশি করে যাবি,

মা বলতো দাদুর কাছে

আছে জ্ঞানের চাবি।

Wednesday, September 16, 2020

 মহারাজার হুকুম

-শুভ জিত দত্ত


মহা বোঝা পরলো কাঁধে

করতে হবে শিকার,

বয়স যখন হলো বারো 

থাকবো কিআর বেকার।


মহা রাজা হুকুম যখন

করতে হবে তামিল,

শিকার ধরার কাজে এবার

হতে হবে শামিল।


এখন বাবা সাথে থাকে

মহারাজার শেপাই ,

আমার এখন পোয়া বারো

কেআর আমার খেপাই।


যেদিন আমি আনব ধরে

মস্ত বড় গরু,

মহা রাজা ভুলেই তিনি

খাবে না আর তরু।


সেদিন থেকে মন্ত্রী হবো

পাবো আস্তো বাড়ি,

রাজ্য ঘুরে তখন আমি

করবো খবর দারি।








Monday, September 14, 2020

 

অধরা তুমি

শুভ জিত দত্ত


তোমার জন্য যতোটা পেরেছি

করেছি সাধ্য মতো,

তবু তুমি রয়ে গেলে অধরা


এই কি সেই তুমি,

হাজারো স্বপ্ন গুলো যাকে নিয়ে

দেখতে দেখতে সময়টা কাটতো।


তুমি হয়তো কিছু বলো নি

সব কিছুই তো আমার,

মনের খোরাক ছাড়া কিছুনা।


জানো তুমি যদি হাত

ধরতে তবে পূর্ণতা পেতো,

মনের জমানো কিছু স্বপ্ন।


সব কথাই নিজের ভেতর

কিছুটা অজান্তেই রেখে দিই,

কষ্টটা আমারই থাক।

Friday, September 11, 2020


 সিংহের হলো কাশি

-শুভ জিত দত্ত


হঠাৎ করে সেদিন নাকি

সাঁতরে ছিলেন বেশি,

তখন থেকে তিনি শুধু

দোষটা দিলেন বেশি।


শিয়াল নাকি তাকে নিয়ে

নদীতে গিয়ে ছিলেন ,

তখন থেকে রাজা মশাই

তাকে করলো ভিলেন।


কাশতে কাশতে গলা দিয়ে

রক্ত পড়ে শুধু ,

বদ্ধি মশাই বুদ্ধি দিলো

খেতে হবে মধু।



পেটে পড়ে নতুন ওষুধ

কাশি একটু থামলো,

রাজা মশাই রাগের পারদ

একটু কিছু কমলো।


শিয়াল এখন মহা খুশি

আনন্দে নেচে ওঠে,

নাচতে নাচতে তিনি আবর

একটু বেঁচে ওঠে।




শিশিরে শিশিরে শারদ আকাশে Shishira Shishira sharod akasha

Wednesday, September 9, 2020

তোমার আগমনী বার্তা


তোমার আগমনী বার্তা

   -শুভ জিত দত্ত



তুমি যখন এসো ধরায় 

শুভ আশিষ নিয়ে,

ভালো রেখো সবার ওমা

ভুবন মাঝে গিয়ে।


নানা সাজে সেজে হঠে

এলো আগমনী,

চারিদিকে বেজে ওঠে

শুনি ওগো ধ্বনি।


শরৎ আসে নীল মেঘে

বারে আনা গোনা,

মনের মাঝে নতুন কিছু

স্বপ্ন গুলো বোনা।


আসবে তুমি সাথে নিয়ে

ভালো লাগার সুবাস,

গড়ে দিও নতুন করে

চিরো শান্তির আবাস।


তোমার আশার প্রহর গুনে

সময় কেটে গেলে,

কাশের মাঠে পরশ নিয়ে

চলছে হেসে খেলে।।






Monday, September 7, 2020

গাছের আছে জীবন


 

গাছের আছে জীবন

-শুভ জিত দত্ত

ওদের আছে তোমার মতো

আস্তো একটা জীবন,

তাদের লতায় পাতায় তৈরি

ঔষধ করো সেবন।


ছায়া দিয়ে আগলে রাখে

আছে অনেক পাতা ,

সবার থেকে ওরা আবার

অনেক বড়ো দাতা।


জীবন বাঁচে তাদের ফলে

আছে পুষ্টি গুণ,

খেতে লাগে অনেক ভালো

সাথে মিষ্টি গুণ।


তবু তোমার তাদের কাটো

যখন ইচ্ছে হলো,

অনেক হলো এবার তবে

ওদের কথা বলো।


ওদের অনেক আঘাত লাগে

যখন তোমার কাটো,

অনেক গরম যখন লাগে

ওদের ছায়ায় হাটো।।