ত্রিলোচন সাহিত্য ভুবন সাপ্তাহিক সাহিত্য পত্রিকাপ্রত্যেক বৃহস্পতিবার প্রকাশিত হয়।আপনার লেখা পাঠান : Shuvojitdutta12@gmail.com

Tuesday, December 29, 2020

 "আঁকড়ে ধরা স্মৃতি"

শুভ জিত দত্ত


তুমি হয়তো ভুলে গেছো
সুখের কিছু স্মৃতি
সন্ধ্যায় জোনাকির আলোয়
প্রতিদিন হেঁটেছি কতটা পথ
তোমার চোখের দিকে তাকিয়ে
শুনেছি হাজারো কথা
কত আবদার আমার কাছে
যতটা সম্ভব মিটিয়েছি
তবু কেনো বিরক্তির রেখা
পড়েনি কোনো ভাবেই
কারণ এটা কাছে আসার
এক শুরুর গল্প
তুমি কি হাজারো অভিমান
জমা করে আছো
নাকি এখনো মন থেকে
আমাকে খুঁজে ফেরো
জানো আমি কিন্তু এখন
সেই তেমনি আছি
ঠিক যেমনটি তুমি চেয়েছিলে
তুমি আমার কাছে।।

Monday, December 21, 2020

মুক্তিযুদ্ধের গল্প

 বাবার দেওয়া ভূমি


আমি তখন তৃতীয় কি চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ি। যতদূর মনে পড়ে তখন আমি খুব ছোট ।বাবার স্মৃতি গুলো একটু একটু মনে পড়ে।মা-বাবা দুজনেই আমাকে খুব ভালোবাসতো , কিন্তু বাবার খুব কাছের ছিলাম আমি। আমার বাবা পেশায় ছিলেন একজন স্কুল শিক্ষক।কোন লোভ ছিল না তার ,কখন বাড়তি আয়ের আশায় প্রাইভেট পড়াতেন না । ক্লাসের শেষে ছাত্রদের অতিরিক্ত সময় দিতেন তিনি।যারা একটু কম বুঝতো তাদের বাড়িতে ডেকে এনে পড়াতেন বিনিময়ে একটি পয়সাও তিনি নিতেন না।সব সময় তিনি দেশকে ভালো বাসার শিক্ষা দিতেন ,আর বলতেন মা যেমন তার স্নেহ দিয়ে বড় করে তোলে দেশ মাতা ঠিক তেমনি তার আলো বাতাস দিয়ে গড়ে তোলে আমাদের।বাবা কোলে মাথা রেখে আর বাবার মুখে গল্প না শুনলে কোন মতেই ঘুম আসতো না। বেশ কদিন ধরে শুধু বলতো তোর জন্য এক টুকরো স্বাধীন ভূমি রেখে যাবো।আর বলতো জানি না কতো দিন তোকে এভাবে গল্প শোনাতে পারবো । যত প্রশ্ন করেছি ততবার একটি কথাই বলতো আমাকে যেতে হবে জানি না ফিরবো কিনা। আমাদের গ্রামে একটাই রেডিও ছিল সেটা ছিল বাবার কাছেই। সবাই আসতো বাবার কাছে খবর নিতে। বাবা সবাইকে একটা কথাই বলত যে আমাদের তৈরি হতে হবে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য।বঙ্গবন্ধু ডাক দিয়েছে আর ঘরে থাকা যাবে না তিনি বলেছেন যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে তৈরি থাকতে হবে। বাবার নিজেই সবাইকে লাঠি নিয়ে প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করেন, সেখানে আমার বড় হয় সালামও ছিল। সেদিন রাতে বাবা আমাকে সেই যে ঘুম পাড়িয়ে চলে গেল আর কথা হয়নি কখনো।শুনেছি বাবার পরিকল্পনাতেই আমাদের গ্রাম সহজে শত্রুমুক্ত হয়েছিল। যুদ্ধ শেষ হলো বড় ভাই সালাম ফিরে আসলো কিন্তু আমার বাবা নাকি না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছিলেন।আমার বাবাকে পাকিস্তানিরা খুব নির্মমভাবে হত্যা করেছিল কারণ তিনি এই গ্রামের মুক্তিযোদ্ধাদের নিজ হাতে প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন এটাই ছিল তাঁর একমাত্র অপরাধ । বাবা ফিরে না এলেও আমাদের জন্য দিয়ে গেছেন এক টুকরো স্বাধীন ভূমি। আর বাবার আদর্শ বুকে নিয়ে আমি আমার দেশকে মায়ের মতোই ভালোবাসবো । আজ ও যখন বাবার কথা মনে পড়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারি না কোনমতেই।।

 "ওরা নির্ভীক যোদ্ধা"

শুভ জিত দত্ত


অস্ত্র হাতে ছিলো ওদের

চলল তাদের গুলি

শহীদ হলো সালাম বরকত

উড়লো মাথার খুলি


ভাইয়ের রক্তে ভিজে গেলো

আমার দেশের মাটি

চারি দিকে শোকের মাতম

চলল কান্না কাটি


আকাশ বাতাস ভারী হলো

কান্নার কোলা হলে

এদিক ওদিক সবার মুখে

ভাষার দাবি বলে


বাঁধা ছিলো কতো রকম

গিয়ে ছিলে সেখানে

মাতৃ ভাষা বাংলা দাবি 

ওঠে ছিলো যেখানে





 "রাজার আইন"

শুভ জিত দত্ত

ব্যাঙ যখন রাজা হলো

নতুন আইন আনলো,

সবাইকে খুব পড়তে হবে

তাতে কিছু জানলো।


মূর্খ হয়ে থাকবে না কেউ

এটা সবাই মানলো,

রাজার আইনে মূর্খ গুলো

রাজ্য ছেড়ে ভাগলো।


শিক্ষা পেয়ে নতুন করে

বাঁচার আশা জাগলো,

জানতে জানতে অনেক কিছু

অজ্ঞতা গুলো ভাগলো।


শিক্ষা যতো বাড়ছে ওদের

জানার সীমা বাড়ালো,

বিস্তার দেখে রাজা এবার

আইন কিছু কাড়লো।


 

"নিঃস্বার্থ কাছে আসা"

শুভ জিত দত্ত


কাজের হিসেবের মাঝে নয়

কোনো স্বার্থের বেড়া জালে

খুঁজো না আমায় কখনো


যদি কখনো কাছে ডাকতে

ইচ্ছে হয় প্রয়োজন‌ ব্যাতীত

তবে আমি আসবো সব ফেলে 


তবে এই সম্পর্ক কি শুধুই

স্বার্থের মাঝে বাঁধা পড়েছে

বার বার নতুন কাজের কথা


যেখানে মনের কষ্ট গুলো

অকারণে শুধু হারিয়ে গেছে 

তোমার অবহেলার মাঝে


তাই হয়তো‌‌ কোনো বাঁধাই

আটকাতে পারিনি শুধু

তোমার অতৃপ্ত মায়া জালে


যদি কাজ‌ ফুরিয়ে যায়

আবার খুঁজতে পারো

ঠিক ফিরে আসবো দেখো


রাখবো না কোনো অভিমান

সব ফেলে আসবো ঠিকই

দেখো শুধু তোমার কাছেই।।





Tuesday, December 15, 2020


 পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় অভিনেতা পার্থ দত্তের(সিআইডি চ্যানেল আট) কন্ঠে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে অসাধারণ একটি আবৃত্তি।সবাই কে দেখার অনুরোধ জানাই

ছড়া কবিতা

 প্রিয় ছেলে বেলা"

শুভ জিত দত্ত


আবার যদি যেতাম ফিরে

দুরন্ত ছেলে বেলায়,

তোদের সাথে থাকবো মেতে

কতো রকম খেলায়।


ইচ্ছে হলেই তোদের সাথে

মেলবো ডানা মেলে,

তোদের সাথে ছুটে যাবো

সকল কিছু ফেলে।


এদিক ওদিক ছুটে ছুটে

থাকবো সবাই মেতে,

খেলা শেষে ছুটে যাবো

তোদের বাড়ি খেতে।


পুকুর ধারে লিচু গাছে

স্বাদের নেই কি জুরি,

সন্ধ্যা হলে তোদের সাথে

করব মোরা চুরি।


হারিয়ে গেলে যায় কি পাওয়া

পুরানো সময় গুলো,

সবার থেকে প্রিয় ছিলো

আমার বন্ধু হুলো।।

Thursday, December 10, 2020

 "তোমার মাঝেই"

শুভ জিত দত্ত


কাছে আমার টেনো না

যদি বেঁধে রাখতে না পারো

আমাকে ছুঁতে যেও না

যদি শয্য করতে না পারো

কথা বলতে যেও না

যদি পছন্দই না করো

আমাকে আর ডেকো না

যদি শুধু সার্থের জন্য খোঁজো

দূরে কখনো ঠেলো না

যদি একবার কাছে টেনে থাকো

বার বার আসতে পারি

যদি কখনো বিপদে তুমি পড়ো

আকাশ ছুঁতে যেও না

যদি হৃদয় ছুঁতে না পারো

আমার কাছে ডেকো না

যদি ছুড়ে ফেলে দাও

নীরব হয়ে থেকো না

যদি কথাই না বলতে পারো

এইভাবে কাছে ডেকো

যদি কখনো মন ছুঁয়ে থাকি।।

Tuesday, December 8, 2020

 "তুমি আসবে"

শুভ জিত দত্ত


যানি না কোন সুদূরে

কোথায় তুমি আছো

ইচ্ছে করে তোমার দেখার

সকাল সন্ধ্যা রাত্রি

দিন কাটে না তোমায় ছাড়া

ভাবি অহ রাত্রি

চাইলে পড়ে পাবে আমায়

একটু খুঁজে দেখো

কোন উপমার ধরা দেবে

সেই কথা শুধু ভাবি

গুণতে গুণতে দিন গুলো

ফুরিয়ে গেল বছর

এই আশাতে দিন গুলো তাই

যাচ্ছে আমার ভালোই

অবাক হবে শুনতে শুনতে

আমার জমানো কথা

আজ তাই ভাবছি শুধু

আসবে কবে তুমি।।